২০ লাখ টাকা চাঁ’দা না দেওয়ায় মসজিদ নির্মাণ বন্ধ করে দিছে ছাত্রলীগ
প্রকাশ: ২০১৯-০৯-২০ ০৭:১৮:৫৫ || আপডেট: ২০১৯-০৯-২০ ০৭:১৮:৫৫

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের তা’ণ্ডবের পর বৃহস্পতিবার বন্ধ হয়ে গেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় একটি মডেল মসজিদ নির্মাণের কাজ। ২০ লাখ টাকা চাঁ’দা না পেয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিবের অনুসারীরা ভাংচু’র ও মা’রপিটের পর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বলে অ’ভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সারা দেশে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। এরমধ্যে পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরে হচ্ছে একটি মডেল মসজিদ। সেখানে ডাঙ্গীবস্তি এলাকায় ৫০ শতক জমির উপর শুরু হয়েছে মসজিদের নির্মাণ কাজগণপূর্ত বিভাগের অধিনে ১২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলা মসজিদ নির্মাণে নিযুক্ত করা হয়েছে ঠিকাদার। রংপুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নর্দান টেকনো ট্রেড কাজ শুরু করতে গিয়েই বাধার মুখে পড়ে।
ঠিকাদার নাজমুল হক বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা সাকিব ২০ লাখ টাকা চাঁ’দা দাবি করেছেন। আমরা তা দিতে অস্বীকার করায় বার বার কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন। বুধবার কাজ বন্ধ করে দিলে রাতেই আমি রংপুর থেকে তেঁতুলিয়ায় আসি।বৃহস্পতিবার সকালে আমরা মডেল মসজিদের ভিত্তি ঢালাইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু কাজ শুরু হতেই সাকিব তার ২০/২৫ জন সহযোগী নিয়ে হাজির হন।কাজ শুরু করার অনুমতি দিলো কে ? এমন কথা বলেই ভাংচু’র শুরু করেন। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে লোকজনসহ আমাকে মা’রধর করেন। আমরা এ ঘ’টনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনাসহ আইনী ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
প্রকল্পের প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের চাঁ’দা না দেয়ায় হামলা হয়। এছাড়াও তারা ইট, বালু ও পাথর সরবরাহের সুযোগ চেয়েছিলেন। তা না পেয়ে ভাংচু’র করেছেন। ঠিকাদার ও আমাদের লোকজনদের মা’রধর করেছেন। আবার কাজ শুরু করলে আমাদের সিমেন্টের সাথে বেঁধে ঢালাই করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।’
সাইট ইঞ্জিনিয়ার নিজাম উদ্দিন জানান, হামলাকারীরা অস্থায়ী ঘর ও চেয়ার টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিস ভাংচু’র করেন। ঠিকাদার নাজমুল হকসহ কর্মীদের মা’রধর করেন ছাত্রলীগ নেতারা। এ সময় ভিডিও ধারণ করায় ঠিকাদারের গাড়ি চালকের মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেন তারা। পরে চাঁ’দা না দেয়া পর্যন্ত কাজ করতে দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দেন।
অ’ভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাকিবের বাবা কাজী আনিসুর রহমান তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের কিছু নেতা আমার কাছে এসেছিল যাতে মসজিদ নির্মাণে কিছু কাজ তাদের দেয়া হয়। যেমন বালু, ইট, পাথর সাপ্লাই। এজন্যই তারা সেখানে ঘোরাঘুরি করে। এর বাইরে আমি তেমন কিছু জানি না।’
তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিব বলেন, ‘আমরা কোথাও চাঁ’দাবাজি করিনি। আমরা চাঁ’দাবাজি টেন্ডারবাজিতে বিশ্বাস করি না। আমি কর্মীদের কাজের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যেসব অ’ভিযোগ করছে তা বানোয়াট।’
জেলা গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাফী মণ্ডল বলেন,’ঢালাইয়ের কাজের জন্য আমি ঘ’টনার সময় সেখানেই ছিলাম। আমার সামনেই স্থানীয় কিছু যুবক কাজটি বন্ধ করে দেয়। তারা ঠিকাদারসহ লোকজনদের মা’রধর করে। বিষয়টি আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।’তেঁতুলিয়া থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘ’টনাটি শোনার পর আমি নিজে ঘ’টনাস্থল পরিদর্শন করি। তবে কেউ লিখিত অ’ভিযোগ দেননি। মামলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’