মনপুরায় ঝড়ের রাতে শিশুর জন্ম, নাম রাখলেন ‘আম্পান’
প্রকাশ: ২০২০-০৫-২২ ১২:৩২:২৪ || আপডেট: ২০২০-০৫-২২ ১২:৩২:২৪

ভোলা থেকে : ভোলার মনপুরার ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তা’ণ্ডবের মধ্যে প্রসব বেদনা নিয়ে আশং’কাজনক অবস্থায় মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন এক প্রসূতি মা। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের প্রচেষ্টায় ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই মা। পরে ডাক্তার ও নার্সরা খুশিতে ওই জন্ম হওয়া ছেলে সন্তানের নাম দেয় ‘আম্পান’। ওই প্রসূতি মা হলেন উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরযতিন গ্রামের বাসিন্দা ছালাউদ্দিনের স্ত্রী সামিয়া (২৫)। ঘূর্ণিঝড়ের রাতে আশং’কাজনক অবস্থায় মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় প্রসূতি মা
সামিয়া। পরে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভোলা নেয়া হচ্ছিল না। তারপরও রাতভর ডাক্তার ও নার্সদের চেষ্টায় সুস্থ অবস্থায় প্রথম ছেলে সন্তান আম্পান (ডাক্তারদের নাম দেয়া) পৃথিবীতে আসে। ওই মা ও সন্তান ‘আম্পান’ সুস্থ রয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রশীদ বলেন, ওই প্রসূতি মা আশং’কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে ওই প্রসূতি মা ছেলে সন্তান দিলে আমরা নাম দেই ‘আম্পান’। মা ও শিশু সুস্থ আছে, সকালে বাড়ি চলে
গেছে।আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সুপার সাইক্লোন আম্ফানের তা’ণ্ডবে ‘সিটি অফ জয়’ কলকাতা এখন ধ্বং’সস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঝড় সব ত’ছন’ছ করে দিয়েছে। কতটা ক্ষ’তি হয়েছে তা এখনো কল্পনাতীত। ধ্বং’সলীলা থেকে রেহাই পায়নি কলকাতা বিমানবন্দরও৷ যে কারো পক্ষে এখন
বিমানবন্দরটিকে দেখা বোঝা মুশকিল এ কলকাতা বিমানবন্দর, নাকি কোন ‘সমুদ্রবন্দর’! রানওয়ে থেকে শুরু করে হ্যাঙার, সবখানে শুধু পানিতে থইথই করছে৷ বুধবার সন্ধ্যায় আম্ফান ধ্বং’সলীলা চালায় বিমানবন্দরেও। হ্যাঙার ভে’ঙে পড়েছে বলে জানা গেছে৷ এয়ার ইন্ডিয়ার ওই হ্যাঙারে সে সময় একটি বিমানও রাখা ছিল৷ তবে বিমানের কোনো ক্ষ’তি হয়নি৷ তবে অন্যান্য হ্যাঙারগুলোর অবস্থা খুবই খা’রাপ৷ সবকিছু ঠিকঠাক করতে সময় লাগবে বলেই জানা গেছে৷ এদিকে, ঘূর্ণিঝড়
আম্ফানে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে গোটা কলকাতা শহর। ২৪ পরগনাসহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোর অবস্থা আরো খা’রাপ। শিকড় উপড়ে রাস্তায় রাস্তায় পড়ে রয়েছে গাছ। তী’ব্র ঝড়ে নির্বি’চারে ভেঙেছে বৈদ্যুতিক পোস্ট। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানালেন, আম্ফানের তা’ণ্ডবে রাজ্যে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে কলকাতায় ১৫ এবং হাওড়ায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যেকেই গাছ পড়ে বা বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে প্রাণ হারিয়েছেন। ভিডিওটি দেখুন.. সূত্র: এই সময়, আনন্দবাজার।ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে কলকাতায় ১৯ জন এবং বিভিন্ন জেলায় ৬১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি মেরামতে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক সঙ্কট চলায় বিপর্যয় মোকাবিলার প্রতিটি টাকা হিসাব করে খরচ করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে, মৃতদের পরিবারকে আড়াই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণও দেওয়ার কথা জানান তিনি। পশ্চিমবঙ্গ
প্রশাসন জানিয়েছে, কলকাতায় পানিতে ডুবে চারজন এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। রিজেন্ট পার্কে দেওয়াল চাপা পড়ে এক নারী ও তার ছেলে এবং কড়েয়ায় টালির চাল ভেঙে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ে উড়ে আসা টিনের চালার আঘাতে শম্ভুনাথ পণ্ডিত স্ট্রিটে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ঝড়ে আরও দুজনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছে পুলিশ। প্রশাসনের প্রাথমিক হিসেবে, পশ্চিমবঙ্গে আম্পান ৪০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। সাত-আটটি জেলা খুবই
ক্ষতিগ্রস্ত, আরও চার-পাঁচটি জেলা বিপর্যস্ত। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করতে প্রতিটি দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৭৩৭ সালে এমন দুর্যোগ হয়েছিল। সতর্কবার্তা পেয়ে পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছিল বলে লক্ষাধিক প্রাণ বাঁচানো গেছে। দুই ২৪ পরগনা ও কলকাতায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর তীব্রতা আয়লার থেকেও অনেক বেশি। এ করোনার থেকেও ভয়াবহ দুর্যোগ।’ ইতিমধ্যেই কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে বকেয়া ৫৩ হাজার
কোটি টাকা কাছে দাবি করা হয়েছে জানিয়ে মমতা বলেন, ‘অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ। কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে কিছু পাইনি। আয় কিছুই নেই। পুরো খরচ ঘর থেকে করতে হচ্ছে। কীভাবে চলবে জানি না।’ ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, আবাসন, সেচ, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পুকুর পরিষ্কার, মাছ ছাড়া এবং ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পকে সংযুক্ত করে পুনর্গঠনের কাজ করবে প্রশাসন। খাবার পানি, ওষুধ, খাবার, মেডিকেল ক্যাম্প, রেশন পরিসেবা অবিলম্বে সচল করতে চাইছে সরকার। ফসলের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরির পাশাপাশি কৃষকদের সাহায্যের রূপরেখা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আম্পান পরবর্তী পুনর্গঠনে মন্ত্রীদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন তিনি। জেলাশাসকদের সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী এবং জনপ্রতিনিধিদের। 5 0 Google +0 0 0