ফ্যাটি লিভারের কারণ ও প্রতিকার
যকৃতে চর্বির আধিক্য হলে এর গাঠনিক বিপর্যয় ঘটে, তখন একে ফ্যাটি লিভার বলে। যকৃতে তার নিজস্ব ওজনের ৫ থেকে ১০ ভাগ চর্বি জমলে এমনটি ঘটে।
কখনো কখনো যকৃতে শুধু চর্বি জমে থাকে, কিন্তু কোনো প্রদাহ থাকে না। একে বলে সাধারণ ফ্যাটি লিভার বা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। পরে একপর্যায়ে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, তখন একে বলা হয় স্টিয়ো-হেপাটাইটিস। এ পর্যায়ে যকৃতের কোষগুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে থাকে।
একপর্যায়ে এখানকার সুশৃঙ্খল কোষ কাঠামো ভেঙে এবড়োখেবড়ো আকার ধারণ করে। ফাইব্রাস টিস্যু বা শক্ত কোষের আধিক্য বেড়ে যায়। এটাকে বলা হয় ফাইব্রোসিস। পরে এটি মোড় নেয় লিভার সিরোসিসের দিকে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভার তেমন কোনো ক্ষতি করে না। তবে প্রদাহ চলমান থাকলে ফ্যাটি লিভার থেকে হতে পারে লিভার সিরোসিস। লিভার সিরোসিস থেকে লিভার সম্পূর্ণ কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। আবার তা থেকে হতে পারে ক্যানসারও। তাই এ রোগকে অবহেলা করা উচিত নয়। যাঁদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাঁদের লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ।
-
স্থূলতা যকৃতে চর্বি সৃষ্টির ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি।
-
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপোথাইরয়েডিজম, পিটুইটারি অন্তক্ষরা গ্রন্থির কার্যক্ষমতা হ্রাস, রক্তে চর্বির মাত্রা বৃদ্ধির কারণেও যকৃতে চর্বি জমে।
-
এ ছাড়া পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম, কিছু ওষুধও ক্ষেত্রবিশেষে ফ্যাটি লিভার তৈরিতে ভূমিকা রাখে। হেপাটাইটিস সিসহ আরও কিছু সংক্রমণে এমনটি হয়ে থাকে।
-
দ্রুত ওজন কমাতে গেলেও অনেক সময় লিভারে চর্বি হতে পারে।
-
যকৃতে চর্বি জমলে তেমন কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। তবে কখনো যকৃৎ বড় হলে পেটের ডান দিকে ব্যথা কিংবা পেট ভারী লাগতে পারে।
-
ফ্যাটি লিভারের বেশির ভাগ লক্ষণ প্রকাশিত হয় যখন, এটি সিরোসিসের দিকে মোড় নেয়।
-
ওজন নিয়ন্ত্রণে নজর দিতে হবে। মেদ ঝরাতে হবে। অত্যধিক ক্যালরিযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
-
শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় স্থান দিতে হবে বেশি করে।
-
অ্যালকোহল বর্জন করতে হবে।
-
অকারণে ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। হারবাল ওষুধের ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে।
-
নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি।